যৌন অক্ষমতায় নিজের চিকিৎসা নিজেই করেন?
/

যৌন অক্ষমতায় নিজের চিকিৎসা নিজেই করেন?

302 বার পড়া হয়েছে

ঢাকাসহ সারাদেশের রাস্তার অলিগলিতে যৌন দুর্বলতায় ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসার অনেক পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও বাসে, ট্রেন বা লঞ্চেও অনেকেই যৌন দুর্বলতার কবিরাজি ঔষধ বিক্রয় করেন, যার কোনো নৈতিক অনুমোদন নেই। শুধু তাই নয়, অনেক শিক্ষিত মানুষও তাদের থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। এমনকি সাধারণ মানুষেরও এ বিষয়ে কোন ধারণা নেই তারা কি চিকিৎসা নিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০০৪ সালে পরিচালনা করা এক গবেষনায় দেখা যায় বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ মানুষের মধ্যে যৌনতা সম্পর্কে নানারকম কুসংস্কার রয়েছে। মুলত এ বিষয়টাকে পুঁজি করেই তারা মানুষের ভুল চিকিৎসা করে যাচ্ছে। তবে আমাদেরকে এ ট্যাবু ভেঙ্গে দিয়ে সাধারণ মানুষকে সঠিক বিষয় জানাতে হবে।

Sexual Dysfunction বা যৌন অক্ষমতা হল একধরনের শারীরিক বা মানসিক সমস্যা যা একজনকে তার সঙ্গীর সঙ্গে যৌন তৃপ্তি পেতে বাধা দেয়। পুরুষদের যৌন দুর্বলতা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা যা সব বয়সের পুরুষদের মাঝেই দেখা যায়, তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে এটি আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।  

পুরুষদের যৌন দুর্বলতাকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমনঃ

  • ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (Erectile Dysfunction) যেখানে পুরুষদের যৌনাঙ্গ মিলনের জন্য যথেষ্ট পরিমানে প্রস্তুত হতে পারে না। ৭-১৮ শতাংশ পুরুষ তাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। মূলত এটকেই পুরুষত্বহীনতা বলা হয়। শৈশব নির্যাতন, দীর্ঘ সময় ধরে কোনো মানসিক চাপ বা দাম্পত্য কলহ ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের প্রধান কারন হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • দ্রুত বীর্যপাত (Premature Ejaculation)পুরুষ খুব দ্রুত প্রচণ্ড উত্তেজনায় পৌছে যায় কিন্তু এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে বীর্যপাত হয়ে যায়।
  • বিলম্বিত বা বাধাপ্রাপ্ত বীর্যপাতঃ এ সমস্যাটি আগের সমস্যার ঠিক উল্টো। এখানে দীর্ঘ সময় মিলন করলেও বীর্যপাত হয় না এমনকি অনেক সময় ২৫-৩০ মিনিট পরেও বীর্যপাত হয় না। এতে সঙ্গীর অবস্থা ভয়াবহ হয়ে যায়।
  • লো লিবিডো (Low Libido) বা যৌন সম্পর্কের আগ্রহে হ্রাসঃ এখানে পুরুষের আগ্রহ কমে যায় অথবা পুরুষ শুধুমাত্র মিলন করতেই পছন্দ করে কিন্তু এর সাথে জড়িত অন্যান্য কাজগুলো করতে অনীহা প্রকাশ করলেই তাকে লো লিবিডো বলা হয়ে থাকে। অনেক সময়ে পুর্বের সমস্যাগুলোর কারনেও অনেক পুরুষের লো লিবিডো হতে পারে। লজ্জা, হতাশা বা পর্যাপ্ত কনফিডেন্সের অভাবে অনেকেই সঙ্গীর সঙ্গে মিলন করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। 

Sexual Dysfunction নিয়ে এ পর্যন্ত প্রচুর গবেষনা হয়েছে। ২০১৮ সালের এক গবেষনার মতে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পুরুষ পুরুষত্বহীনতায় আক্রান্ত। এর আগে ১৯৯৪ সালে বোস্টনে করা এক গবেষনা দেখা যায় প্রায় ৫২ শতাংশ পুরুষ যেকোনো ধরনের Sexual Dysfunction ফেইস করেছেন এবং ৪০ থেকে ৭০ বয়সের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তা ৫-১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। যদিও বয়সের সাথে সাথে Sexual Dysfunction এর পরিমান বাড়ার কথা সবসময় বলা হলেও Journal of Sexual Medicine নামক এক জার্নালের গবেষনা তথ্যের মতে ৪০ বছরের নিচে পুরুষত্বহীনতায় আক্রান্ত প্রায় ২৬ শতাংশ পুরুষ। 

এতো গেলো সারা বিশ্বের কথায়। Sexual Dysfunction বা যৌন দুর্বলতার দিক থেকে আমাদের দেশের অবস্থাও ব্যাপক ভয়াবহ। ২০১৯ এ বিবিসি নিউ বাংলা’র এক তথ্যমতে দেখা যায়, প্রচুর যৌন উত্তেজক ঔষধের কাঁচামাল ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে যে বাংলাদেশের বাজারে এসব ঔষধের বিশাল চাহিদা থাকার কারণেই অবৈধ পথে তা বাংলাদেশে আসছে। 

যৌন উত্তেজক ঔষধগুলোকে প্রেসক্রিপশন মেডিসিন বলা হয়, অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এসব ঔষধ কেউ কিনতে পারবে না। এক সময় বাংলাদেশের বাজারে এ জাতীয় ঔষধগুলো নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু পরবর্তিতে Erectile Dysfunction’র রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এসব ঔষধগুলোকে দেশের বাজারে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত দেয়।

উপরের তালিকাটিতে দেখা যায় বাংলাদেশের ঔষধের বাজারে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিউক্যাল কোম্পানির চার ধরনের প্রায় ৮০ টি ঔষধ বাজারজাত করা আছে। এদের মধ্যে টাডালাফিল ও ডেপোক্সেটিনের বিস্তারিত বর্ননা করা হবে। 

টাডালাফিল

যৌন উত্তেজক ঔষধ হিসেবে সর্বপ্রথম সিলডেনাফিল বাজারে আসলেও এর চেয়ে টাডালাফিলের কার্যকারিতা কিছুটা হলেও বেশি, যদিও দুইটি ঔষধ PDE5 বা ফসফোডাইএস্টারেজ ৫ কে বন্ধ করে লিঙ্গের উত্থানের কাজকে সহজ করে থাকে। সাধারনত টাডালাফিল ৩০ মিনিটের মধ্যেই তার কার্যকারিতা শুরু করে দেয় এবং এই ঔষধের কার্যকারিতা ৩৬ ঘন্টা পর্যন্ত থাকতে পারে। টাডালাফিল পুং জননাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে ইরেকশনে সহায়তা করে। 

শরীরে যখন যৌন উদ্দীপনা তৈরি হয় তখন নার্ভ ও এন্ডোথেলিয়াল কোষ থেকে নাইট্রিক্স অক্সাইড নির্গত হয় এবং তা লিঙ্গের মসৃন পেশী কোষে প্রবেশ করে এবং গুয়ানাইল সাইক্লেজের সাথে আবদ্ধ হয়। এই আবদ্ধকরনের ফলে গুয়ানোসিন ট্রাইফসফেট (GTP) থেকে সাইক্লিক গুয়ানোসিন মনোফসফেট (cGMP) উৎপন্ন হয়। সাইক্লিক গুয়ানোসিন মনোফসফেট (cGMP) লিঙ্গের উত্থানের জন্য সহায়ক। কারণ সাইক্লিক গুয়ানোসিন মনোফসফেট (cGMP) প্রোটিন কাইনেজকে সচল করে, যার ফলে কোষের ভেতরের ক্যালসিয়ামের পরিমান কমে যায়। ফলে মসৃন টিস্যু শিথিল হয় এবং এর ভেতরের রক্ত সঞ্চালন মাত্রা বেড়ে যায় এবং লিঙ্গের উত্থান দ্রুত হয়। পুর্বের আলোচনায় আমরা দেখেছি শারিরীক সমস্যা, বিষন্নতা বা বয়স হয়ে গেলে যৌন দুর্বলতা দেখা দেয়। এসময়  ফসফোডাইএস্টারেজ ৫ সাইক্লিক গুয়ানোসিন মনোফসফেট (cGMP) ভেঙ্গে গুয়ানোসিন মনোফসফেট (GMP) উৎপন্ন করে ফেলে, ফলে তা প্রোটিন কাইনেজকে সচল করতে পারে না এবং লিঙ্গ শীথিল হয়ে যায়।

টাডালাফিল ঔষধটি ফসফোডাইএস্টারেজ ৫ কে ব্লক বা বন্ধ করে দেয় ফলে আর  সাইক্লিক গুয়ানোসিন মনোফসফেট (cGMP) ভেঙ্গে গুয়ানোসিন মনোফসফেট (GMP) উৎপন্ন হতে পারে না এবং লিঙ্গে প্রচুর পরিমানে  সাইক্লিক গুয়ানোসিন মনোফসফেট (cGMP) দেখা যায়, যা লিঙ্গ উত্থান করতে সহায়তা করে থাকে।

এভাবেই টাডালাফিল ঔষধটি কাজ করে থাকে। 

যৌন অক্ষমতা ছাড়াও টাডালাফিল বিনাইন প্রস্টেট হাইপারপ্লাসিয়া বা প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়ার চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়। সাধারণত বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে এ রোগ বেশি দেখা দেয়।

টাডালাফিল ঔষধটি সাধারণত  ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ক্রয় ও সেবন করা উত্তম। আমাদের দেশে টাডালাফিল ট্যাবলেট ফর্মে সাধারণত ২.৫ থেকে ২০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত পাওয়া যায়। রোগীর চিকিৎসার উপর ভিত্তি করে ডাক্তার ডোজ নির্ধারন করে দিয়ে থাকেন। যৌন অক্ষমতায় মূলত দুইভাবে টাডালাফিল দিয়ে চিকিৎসা করা যায়।

  • ইন্টারকোর্সের ৩০ মিনিট পুর্বে এই ঔষধটি নিলে নেয়া যেতে পারে, এতে প্রায় ৩৬ পর্যন্ত কার্যকারিতা যৌন সক্ষমতা দেখায়।
  • প্রতিদিন একটি করে ঔষধ নেয়া যেতে পারে। তবে এভাবে নিলে দুইটা ঔষধ নেয়ার মাঝেই  ইন্টারকোর্স সম্পন্ন করতে হবে। 

তবে যেভাবেই ঔষধটি নেয়া হোক না কেন, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অন্যান্য ঔষধের মতো টাডালাফিলেরও কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। যেমনঃ ঝাপসা দৃষ্টি, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, ঘাড় ব্যথা, বদহজম, এসিডিটি ইত্যাদি। 

তবে দীর্ঘ সময় ধরে টাডালাফিল ব্যবহার অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তার কয়েকটি হলোঃ

  • হেমাটোস্পার্মিয়া (বীর্যের সাথে রক্ত যাওয়া)
  • পিনাইল হেমোরেজ (লিঙ্গের চামড়া দিয়ে রক্ত বের হওয়া, প্রসাবের সাথে রক্ত যাওয়া)
  • অযথাই লিঙ্গের উত্থান

এছাড়াও হৃদরোগ যেমন, মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন, বুক ব্যথা, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদির মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। 

তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজ থেকে এসব ঔষধ চিকিৎসায় ব্যবহার করা উচিত নয়।

ডেপোক্সেটিন

ডেপোক্সেটিন ঔষধটি সাধারণত দ্রুত বীর্যপাতের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের বাজারে ৩০ ও ৬০ মিলিগ্রাম এই দুই মাত্রাতেই পাওয়া যায়। টাডালাফিলের মত এটিও ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। এই ঔষধটি মূলত সিলেকটিভ সেরোটনিন রিআপটেক ইনহিবিটর (SSRI) হিসেবে কাজ করে। 

সেরোটনিন এক ধরণের নিউরোট্রান্সমিটার, যার কাজ হচ্ছে নিউরন বা আমাদের মস্তিস্ক থেকে তথ্য দেহের অন্যান্য জায়গায় পাঠানো। এজন্য প্রি সাইনেপটিক ও প্রো সাইনেপটিক নিউরনের মধ্যবর্তী অঞ্চল যা সাইনেপটিক কেপ্ট নামে পরিচিত তাতে সেরোটনিন বা নিউরোত্রান্সমিটারের মাত্রা বেশি থাকা লাগে। কিন্তু অনেক সময়েই বিশেষ করে সেরোটনিন রিআপটেক হয় বা পুনরায় তার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে চায়। ফলে সে পূর্ণ কার্যক্ষম হতে পারে না। ফলে অল্পতেই বীর্যপাত হয়ে যায়। সিলেকটিভ সেরোটনিন রিআপটেক ইনহিবিটর (SSRI) এই রিআপটেক বন্ধ করে দেয়, ফলে সাইনেপটিক ক্লেপ্টে সেরোটনিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং দ্রুত বীর্যপাত নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়। 

১৮ বছরের কম শিশু বা মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ঔষধ ব্যবহার করা যাবে না। সাধারণত ইন্টারকোর্সের ১-৩ ঘন্টা পূর্বে এই ঔষধ সেবন করা উত্তম। মানসিক অবসাদ বা বিষন্নতার কোন ঔষধ চলতে থাকলে এই ঔষধ নেয়া যাবে না। হৃদরোগ, লিভারের সমস্যা থাকলে এ ঔষধ খাওয়া যাবে না।

টাডালাফিলের মতো এতেও কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তবে যেহেতু এটা সেরোটনিনের রিআপটেককে বন্ধ করে তাই এর দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার শরীরে নানা রকমের জটিলতা তৈরি করতে পারে। যেমন; ভুলে যাওয়া, হা পা কাঁপা, বিভিন্ন নিউরনাল রোগ ইত্যাদির সমস্যা হতে পারে। তাছাড়াও দ্রুত বীর্যপাতের চিকিৎসায় অত্যাধিক ব্যবহার করে বিলম্বিত বীর্যপাত হতে পারে, যার ফলে সঙ্গী কষ্ট পেতে পারে। তাই এসব ঔষধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়।

প্রশ্ন উত্তর

এবারে যৌন অক্ষমতা এবং এসব ঔষধ নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করব।

১। যৌন অক্ষমতার প্রধান কারনগুলো কি কি? (What are the main cause of sexual dysfunction?)

হৃদরোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থুলতা এবং ধূমপানের মতো শারীরিক সমস্যাগুলি যৌন অক্ষমতা বা দ্রুত বীর্যপাতের কারণ হতে পারে। এছাড়াও চিন্তা, হতাশা, উদ্বেগ, মানসিক চাপ, সম্পর্কের টানাপোড়ন ইত্যাদি যৌন অনুভূতির সম্পর্ককে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

২। আপনি কিভাবে যৌন অক্ষমতার পরীক্ষাগুলো করবেন? (How do you check sexual dysfunction?)

সাধারণত বেশিরভাগ রোগির ক্ষেত্রেই কিছু শারিরীক পরীক্ষা ও কিছু প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমেই ডাক্তার দ্রুত বীর্যপাত বা যৌন অক্ষমতার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেন। তারপরেও পরিপুর্নভাবে নিশ্চিত হবার জন্য মাঝে মাঝে কিছু ডায়াগনস্টিক টেস্ট করতে হয়। যেমনঃ

  • শারিরিক পরীক্ষাঃ এক্ষেত্রে ডাক্তার লিঙ্গ এবং অন্ডকোষের অবস্থা দেখতে পারেন এবং এদের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা যাচাই করতে পারেন।
  • রক্ত পরীক্ষাঃ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ডাক্তার মূলত হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন।
  • প্রসাব পরীক্ষাঃ রক্ত পরীক্ষা মতো এতেও ডাক্তার ডায়াবেটিসের কোনো সমস্যা আছে কিনা তা দেখতে চায় বা প্রসাবে কোনো ইনফেকশান দেখতে চায়।
  • আলট্রাসাউন্ডঃ লিঙ্গে রক্ত প্রবাহের মাত্রা পরিমাপের জন্য এ পরীক্ষাটি করা হয়। উক্ত অবস্থাটি দেখার জন্য একটি ভিডিও করা হয়। 

৩। প্রাকৃতিকভাবে কিভাবে আমি দ্রুত বীর্যপাতের চিকিৎসা করাতে পারি? (How do I fix my ED naturally?)

সাধারণত ঔষধ শুরু করার পুর্বে কিছু প্রাকৃতিক খাবার বা জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের মাধ্যমে দ্রুত বীর্যপাতের চিকিৎসা করা যেতে পারে। যেমনঃ

  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। মাছ, সবজি, ফলমূল বেশি করে খাওয়া।
  • নিয়মিত শারিরীক ব্যায়াম করা। ২০১৮ সালের এক গবেষনা মতে প্রতিদিন ৪০ মিনিট ব্যায়াম করলে ছয়মাসের মধ্যেই দ্রুত বীর্যপাতের সমস্যা দূর করা সম্ভব।
  • পরিপূর্ন ঘুম।
  • ওজন কমানো,
  • মানসিক অবসাদ, চিন্তা, হতাশা ইত্যাদি দূর করে সবসময় চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করা।
  • ধুমপান ও মদ পরিপুর্নরুপে বর্জন করা।

৪। মহিলারা টাডালাফিল নিতে পারবে? (Can females take Tadalafil?)

সাধারণত টাডালাফিল ঔষধটি পুরুষদের বীর্যপাতের সমস্যার জন্য ব্যবহার করা হয়। গবেষনায় মেয়েদের কোন সমস্যা হবে এমন কোণ তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে যেহেতু এটা মেয়েদের ঔষধ না, তাই অযথা এটা না খাওয়াই ভালো।

৫। টাডালাফিলের চিকিৎসা আমি কখন বন্ধ করব? (When should I stop taking tadalafil?)

সাধারনত এই চিকিৎসাগুলো নিজে নিজে করা উচিত না। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করা উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ মতো চিকিৎসা বন্ধও করা উচিত।

৬। টাডালাফিল ২০ মিলিগ্রামের দুইটা ঔষধ একসাথে নিতে পারব কি? (Can I take 2 20mg tadalafil at once?)

টাডালাফিলের সর্বোচ্চ মাত্রা হচ্ছে ২০ মিলিগ্রাম। এক্ষেত্রে আপনি যদি দুইটি ২০ মিলিগ্রামের ঔষধ একসাথে খেয়ে ফেলেন, সেক্ষেত্রে আপনার মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, পিনাইল হেমোরেজ বা হেমাটোস্পার্মিয়াও হতে পারে।

আমি ইমতিয়াজ আহমদ, বর্তমানে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত আছি। এছাড়াও আমি মলিকুলার বায়োলজি ও ফার্মাকোলজি ল্যাবে রিসার্চ করেছি এবং অনলাইনে টুকটাক লেখালেখির কাজ করি। অবসর সময়ে ঐতিহাসিক বই পড়া আমার শখ।

একটি প্রত্যুত্তর করুন

Your email address will not be published.