এটা স্বাভাবিক যে আমরা যখন কেউ ওজন কমানোর চেষ্টা করি খুব দ্রুত এটি কমাতে চাই। কিন্তু যারা ধীরে ধীরে এবং স্থিরভাবে ওজন কমায় তারা ওজন কমাতে বেশি সফল। স্বাস্থ্যকর ওজন হ্রাস শুধুমাত্র একটি ‘খাদ্য’ বা ‘প্রোগ্রাম’ নয়। এটি একটি চলমান জীবনধারা যা স্বাস্থ্যকর খাওয়ার ধরণ এবং নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত করে।
ওজন কমানো (weight loss) সহজ নয় বরং এতে দৃঢ় মনোবল লাগে। আপনি কখনোই শুয়ে-বসে থেকে এবং পেট ভরে ইচ্ছেমত খাবার খেয়ে ওজন কমাতে পারবেন না।
একবার আপনি একটি স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জন করলে, দীর্ঘমেয়াদে ওজন কম রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং শারীরিক পরিশ্রম চালু রাখুন।
ওজন কমাতে শীর্ষ ১০টি টিপস
১। সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাবেন না এবং নিয়মিত খাবার খান
সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাওয়া আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে না। আপনি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টিগুণ মিস করতে পারেন এবং ক্ষুধার্ত বোধ করার কারণে আপনি সারাদিনে আরও বেশি জলখাবার খেয়ে থাকতে পারেন। দিনের বেলা নিয়মিত সময়ে খাওয়া দ্রুত হারে ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ চর্বি এবং চিনিযুক্ত খাবারগুলি খাওয়ার প্রলোভনও হ্রাস করে।
২। প্রচুর ফল এবং সবজি খান
ফল ও সবজিতে ক্যালোরি ও চর্বি কম থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে – যা সফল ওজন কমানোর জন্য ৩টি অপরিহার্য উপাদান। এছাড়াও এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে।
৩। আরও সক্রিয় হন, কাজকর্ম ও ব্যায়াম করেন
সক্রিয় থাকা ওজন হ্রাস এবং এটি ধরে রাখার মূল চাবিকাঠি। প্রচুর স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি, ব্যায়াম অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করতে পারে যা আপনি শুধু ডায়েটের মাধ্যমে হারাতে পারবেন না। এমন একটি একটিভ থাকার উপায় খুঁজুন যা আপনি উপভোগ করেন এবং আপনার রুটিনের সাথে মানিয়ে নিন।
৪। প্রচুর পানি পান করুন
মানুষ কখনো কখনো ক্ষুধার সাথে তৃষ্ণাকে গুলিয়ে ফেলে। যখন এক গ্লাস জল সত্যিই আপনার প্রয়োজন তখন আপনি অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করতে পারেন। তাই তৃষ্ণা বোঝার চেষ্টা করুন এবং পানি পান করুন।
৫। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার খান
প্রচুর ফাইবারযুক্ত খাবার আপনার পেট ভরা আছে – এমন বোধ করতে সাহায্য করে, যা ওজন কমানোর জন্য উপযুক্ত। ফাইবার শুধুমাত্র গাছপালা থেকে পাওয়া খাবারে পাওয়া যায়, যেমন ফল এবং সবজি, ওটস, পুরো শস্যের রুটি (wholegrain bread), বাদামী চাল এবং পাস্তা, এবং মটরশুটি, মটর এবং মসুর ডাল।
*আপনার পেট ভরে গেছে – এই সিগনাল মস্তিস্ককে জানাতে পাকস্থলীর প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে, তাই ধীরে ধীরে খান এবং পেট ভরে গেছে এই অনুভূতির জন্যে অপেক্ষা না করেই খাওয়া বন্ধ করুন।
৬। ক্রয়ক্রিত প্যাকেটজাত খাবারের লেবেল পড়ুন
খাবারের লেবেল কীভাবে পড়তে হয় তা জানা আপনাকে স্বাস্থ্যকর বিকল্পগুলি বেছে নিতে সহায়তা করতে পারে। ওজন কমানোর পরিকল্পনায় আপনার দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের নির্দিষ্ট সীমার সাথে একটি খাবার কীভাবে ফিট করে তা নির্ধারণ করতে লেবেলে দেওয়া ক্যালোরি তথ্য ব্যবহার করুন।
৭। একটি ছোট প্লেট ব্যবহার করুন
ছোট প্লেট ব্যবহার করা আপনাকে অল্প খাবার খেতে সাহায্য করতে পারে। ছোট প্লেট এবং বাটি ব্যবহার করে, আপনি ক্ষুধার্ত না হয়ে ধীরে ধীরে অল্প খাবার খেতে অভ্যস্ত হতে পারেন।*
৮। কোন নির্দিষ্ট খাবার বাদ দিবেন না
আপনার ওজন কমানোর যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন সেখান থেকে কোনো খাবার নিষিদ্ধ করবেন না, বিশেষ করে যেটি আপনার পছন্দের। কোন খাবার নিষিদ্ধ করলে আপনি সেগুলিকে আরও বেশি খেতে চাইবেন। আপনার দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের সীমার মধ্যে থাকা পর্যন্ত আপনি মাঝে মাঝে ট্রিট উপভোগ করতে পারবেন না এমন কোন কারণ নেই।
৯। জাঙ্ক ফুড ক্রয় বন্ধ করুন
প্রলোভন এড়াতে, জাঙ্ক ফুড – যেমন চকোলেট, বিস্কুট, ক্রিস্প এবং মিষ্টি ফিজি পানীয় – বাড়িতে মজুদ করবেন না। পরিবর্তে, ফল, লবণবিহীন চালের কেক, ওট কেক, লবণবিহীন বা মিষ্টি ছাড়া পপকর্ন এবং ফলের রসের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন।
১০। আপনার খাবারের পরিকল্পনা করুন
সপ্তাহের জন্য আপনার প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজন, রাতের খাবার এবং স্ন্যাকস পরিকল্পনা করার চেষ্টা করুন, নিশ্চিত করুন যে আপনি আপনার ক্যালোরি গ্রহণের দৈনিক সীমা বজায় রেখেছেন। আপনি একটি সাপ্তাহিক কেনাকাটার তালিকা তৈরি করতে পারেন।